Sunday, January 29, 2017

আপাত দৃষ্টিতে দেখলে মনে হয় দাজ্জালের আলোচনা, সমালোচনা, দাজ্জালের চৌদ্দ গুস্টি উদ্ধার করা সবই সহজ। হ্যাঁ সহজ, যদি আপনি ট্রেডিশনাল পদ্ধতিতে দাজ্জাল নিয়ে আলোচনা করেন তাহলে আপনাকে নিয়ে কেউ ঘাটাবে না, কেউ আপনার দিকে চোখ তুলেও চাইবে না। কিন্তু যদি আপনি দাজ্জাল নিয়ে একটু গভীরে আগান, একটু গভীর চিন্তা করেন, এবং দাজ্জালের সত্যটা প্রকাশ করার চেষ্টা করেন। তাহলে আপনি দাজ্জালের রোষানলে পড়বেন, যখনই আপনি সত্য পথে দাজ্জালের মুখোশ উম্মোচন করার চেষ্টা করবেন তখনই আপনাকে বাঁধা দেওয়া হবে, বাঁধাটা আসবে আপনার মা-বাবা হতে, আপনার পরিবার হতে, পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন হতে, রাষ্ট্র হতে, রাষ্ট্রীয় নেতৃবৃন্দ হতে, এসব মানুষগুলো এক একজন দাজ্জালের প্রোটেক্টর হিসাবে কাজ করে, এরা নিজেদের অজান্তেই দাজ্জালের রোবটিক সহচর হিসাবে কাজ করে। এরা ব্রেইনওয়াশড, কি দ্বারা? মিডিয়া দ্বারা, পূর্ববর্তীদের কিচ্ছা কাহিনী দ্বারা, শিক্ষানীতি দ্বারা, জীবন ব্যবস্থার পদ্ধতি দ্বারা।
দাজ্জাল চাই সুরেলা কণ্ঠের প্যাকপ্যাকানিতে দাজ্জালকে মারুক, কাটুক, ত্যাতলা করে দিক। এই এলো বলে দাজ্জালকে নিয়ে ম্যাতকার করুক। কারণ ট্রেডিশনাল পদ্ধতিতে দাজ্জালের আলোচনায় দাজ্জাল সব সময় সেফ জোনে থাকে।
দাজ্জাল চাই না, কেউ মুক্ত অর্থনীতি, ডেমোক্রেজি, সেকুল্যার শিক্ষা ব্যবস্থা, যুদ্ধ, জাতিসংঘ, গণতন্ত্র, নারীতন্ত্র এসব নিয়ে আলোচনা করুক। কারণ এসবেই আছে দাজ্জালের আসল স্বরুপ, এসবে হাত দিলে দাজ্জাল তো আর আপনাকে ছেড়ে কথা বলবেনা, যে কোন প্রকারে আপনার টুটি চেপে ধরবেই।

Friday, January 13, 2017

আমি আগেও বেশ কয়েকবার বলেছি। এখনো বলছি বর্তমানে আমাদের মনের শুভ্রতা, পবিত্রতা, আধ্যাত্বিকতা একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। ঈমানের আলো যা একটু জ্বলছে তা স্রেফ আল্লাহর একত্ববাদের উপর বিশ্বাসের কারণেই। কিন্তু বর্তমান বিশ্বকে বুঝার জন্য এ ঈমান যথেষ্ট ন‌ই।
বর্তমানে বাহ্যিক দৃষ্টিতে যা দেখছি, শুনছি, উপলব্ধি করছি তার বেশিরভাগই ফেইক, অসত্য।
কিছুক্ষণ আগে শেখ ইমরান নজরের সুরা কাহাফ ও বর্তমান বিশ্ব বইটির কয়েক পাতা পড়েছি মাত্র, এ কয়েক পাতা পড়েই আমার তো গায়ের লোম খাড়া হওয়ার যোগাড়। কি পরিমাণ ভুলের মধ্যে আছি আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়ালাই মালুম।
আমরা বাহ্যিক দৃষ্ঠিতে যা দেখি, আধ্যাত্বিক অন্ত:দৃষ্টি দিয়ে যদি তা দেখতে পেতাম তাহলে দেখা যেত আমরা যা বিশ্বাস করি, অন্তরে লালন করি, তার ৭০ ভাগই আমাদের চিন্তার সাথে সাংঘর্ষিক। আমার তো এখন ভয়ই হয়, না জানি আমার বিশ্বাসে কি পরিমাণ ঘাপলা আছে।
এক্ষনে মনে হলো, কেন মুসা আ: খিজির আ: সাথে বেশিক্ষণ অবস্থান করতে পারে নাই।
যেখানে বাহ্যিক দৃষ্টি দিয়ে দেখার কারণে মুসা আ: এর মতো নবীর মনে দুদোল্যমান সৃষ্টি হয়েছিল, সেখানে আমরা কি ছার!!!
একটা সময় প্রচুর গান শুনতাম। এখনও যে শুনিনা
তা নয়, তবে না শুনার চেষ্টায় আছি। রসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন,
সঙ্গীত মানুষের মনে নিফাক সৃষ্টি করে। নিফাক
কি? এর বাংলা অর্থ যথাসম্ভব প্রতারণা,
কপটতা। সঙ্গীত কিভাবে মানুষের মনে প্রতারণার
সৃষ্টি করে তা নিয়ে ভাবতাম। ভাবতাম সঙ্গীত
তো মনকে হালকা করে, রোমান্টিকতায় ভাসায়।
তাহলে প্রতারণার সৃষ্টি করে কিভাবে? আসলে
আমরা যখন মিউজিক শুনি মস্তিষ্কের
নিউরণগুলো উদ্বেলিত হয়ে মনকে আন্দোলিত
করে, অবচেতন মনে কল্পনার জগতে ভাসায়,
কিংবা প্রিয়ার কথা মনে করিয়ে হৃদয়ে সুখের
অনুভূতি জাগায়। এভাবে গান শুনার পর যখন
আমরা বাস্তবে ফিরে আসি, যখন বাস্তবতার
কঠিন মুহুর্তগুলোর সম্মুখীন হয়ে পরিস্থিতির
সাথে অ্যাডাপ্ট করতে ব্যর্থ হয়। তখনই মনে
আশ্রয় নেয় প্রতারণা/কপটতা। ফলে প্রতারণার
আশ্রয় নিয়ে হলেও উদ্দেশ্য হাসিলের ঘৃন্য
চেষ্টায় লিপ্ত হয়ে পড়ি। সঙ্গীতের আরেকটা
বিষয় হলো এই, যেসব বাক্য, কথা, শব্দ আমরা
সচরাচর বলিনা, বিশ্বাস করিনা, গানের মাধ্যমে
দাজ্জাল সেসবে মানবজাতিকে এখন অভ্যস্থ
করে তুলেছে, যেমন বর্তমানে গানের মাধ্যমে
অধিকাংশ মানুষ নিজেদের অজান্তেই শিরক,
অবাধ যৌনতা, প্রেম, সমকাম, কামনা এসব
বিষয়গুলো চর্চা করছে। আমার মনে হয়,
বর্তমানে প্রেম নামক ভাইরাসকে মহামারীতে রুপ
দেওয়ার প্রধান টনিক হিসাবে কাজ করছে এই
মিউজিক জগত।
ঘটনাটা ডা: জাকির নায়েকের লেকচারে শুনেছিলাম, সম্ভবত ইউরোপের কোন এক হসপিটালে কুরআনের আয়াতের পানি পড়া খেয়ে ক্যানসার রোগী ভালো হয়ে গিয়েছিল। পরে ঐ পানি ল্যাবে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর দেখা গেল পানিতে ক্যানসার সেল নষ্ট করার প্রচুর ব্যাকটেরিয়া মজুদ রয়েছে।
এবার একটি হাদিস বলি, আবু সাঈদ র: হতে বর্ণিত রসুল স: এর কিছু সাহাবী তখন সফরে ছিলেন। তারা আরবের এক গোত্রের কাছে মেহমান হওয়ার আর্জি পেশ করলে তারা সাহাবীদের মেহমান করতে অস্বীকৃতি জানায়। ঐ রাতে তাদের গোত্র প্রধানকে সাপ কিংবা বিছা কামড়ালে, সকল চেষ্টার পর তারা সাহাবীদের কাছে সাহায্যের জন্য যায়। যেহেতু তাদের মেহমান করতে অস্বীকৃতি জানায়, সেহেতু সাহাবীরা এক পাল ভেড়ার বিনিময়ে তাদের চিকিতসা করার প্রস্তাব দেয়। পরে তাদের মধ্যে একজন সাহাবী রুকইয়া (দোয়াটি সুরা ফাতেহা ছিল) পড়ে দম নিলে গোত্র প্রধান ভালো হয়ে উঠে। পরে বিনিময়ে পাওয়া ভেড়াগুলো নিযে সাহাবীরা রসুল স: কাছে গিয়ে উক্ত ঘটনা বর্ণনা করলে, রসুল স: বলেন, তুমি কিভাবে জানলে রুকইয়া হিসাবে সুরা ফাতিহা পড়া যায়? আরও বললেন, তুমি সঠিক কাজটি করেছো। এরপর রসুল স: বলেন, তোমরা যা উপার্জন করেছ তা ভাগ করে নাও আর আমাকেও একটি অংশ দাও তখন রসুল স: মৃদু হাসলেন। (সহি বুখারী)
আল্লাহর দেওয়া শরীরে রোগ থাকবেই, সে রোগ ভালো করার পদ্ধতিও আল্লাহ সুবাহানু ওয়া তায়ালা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে দাজ্জালের অনুসারীরা সে রোগের সুযোগ নিয়ে মানবজাতিকে এক প্রকার কুক্ষিগত করে রেখেছে। চিকিতসার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানই একমাত্র ভরসা, চিকিতসা মাত্রই বিজ্ঞান, এভাবেই চিন্তা করতে বাধ্য করছে বর্তমান দাজ্জালিক চিকিতসা ব্যবস্থা। তথাকথিত এসব মরণফাঁদ চিকিতসা ছাড়াও যে আরও অনেক চিকিতসা পদ্ধতি রয়েছে তা যেন বর্তমান বিশ্ব বিশ্বাসই করতে পারছেনা। অপরদিকে এলিট পাওয়ারদের উদ্ভাবিত মড়িফাইড মেডিসিন দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবহার করার কারণে মানব শরীরের ইমিউন সিস্টেম ধীরলয়ে ড্যামেজড হয়ে যাচ্ছে। তাহলে কি করা উচিত আমাদের, কি করতে পারি? আমাদের ফিরে যেতে হবে রসুল স: চিকিতসা ব্যবস্থায়।
আর মুনতাহা ভাইয়ের সাথে সুর মিলিয়ে বলতেই হয়, সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকবে সেসব অতি অল্প সংখ্যক মুসলিমরা যারা তাদের চিকিতসার জন্য সুন্নতি পদ্ধতি অবলম্বনে অভ্যস্ত। যাদের খাদ্য আসবে সুবহানাল্লাহর মাধ্যমে, আলহামদুলিল্লাহর মাধ্যমে, আল্লাহু আকবারের মাধ্যমে, তাদের চিকিতসা পদ্ধতিও হবে সুন্নতি চিকিতসা, নব্বী চিকিতসা।
ক্লোজআপ খাটে আসার সরি... কাছে আসার সাহসী গল্প নামে নাটকগুলো নতুন করে তরুণ তরুণীর মগজ ধোলাইয়ে নেমেছে। ধর্মীয় অনুশাসন, পিতামাতার মান সম্মান, সামাজিক বাধ্য বাধকতার খেতায় আগুন দিয়ে প্রেমের নামে ফষ্টিনষ্টি করে ঘুরে বেড়ানো কপোত কাপোতীদের জীবনের গল্প নিয়ে মিডিয়ার এই নতুন গুটিবাজী।
ঝোপের আড়ালে, বনে বাদাড়ে, আড়ালে আবডালে, লিটনের প্লাটে তথাকথিত এসব সাহসী গল্প তৈরীতে তরুন তরুনীরা এমনিতেই খুবই সিদ্ধহস্ত, তার উপর নতুন করে কোন চূলকানিতে যে চ্যানেলগুলো এসব আকামগুলো সাহসী গল্প নাম দিয়ে জনসাধারণের নজরে নিয়ে আসছে তা বোদগম্য হচ্ছেনা।
অবশ্য গগ মেগগ মিডিয়া চাইও এসব দেখে দেখে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে উঠুক, এসবে জড়িয়ে যুবসমাজের চিন্তার প্রসারতা স্থবির হয়ে যাক। রোবটে পরিণত হোক এক একটা আদম সন্তান, মঞ্চ তৈরী হোক, অত:পর ফিরে আসুক দাজ্জাল তার আসল আবরণে ....।