রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন সাহাবীদের নিয়ে মজলিসে বসে
আছেন, এমন সময় একজন মহিলা এসে রসুল স: কে প্রস্তাব করলেন আমাকে বিবাহ করুন,
রসুল স: উত্তর দিলেন এই মুহুর্তে আমার বিবাহ করার হুকুম নেই। মহিলাটির
বারবার পিড়াপীড়িতে রসুল স: সাহাবীদের উদ্দেশ্য করে বললেন, কেউ এই মহিলাটিকে
বিবাহ করতে চায় কিনা। একজন সাহাবী বললেন আমি বিবাহ করতে চাই, রসুল স:
জানতে চাইলেন, মোহরানা আদায়ের কি কিছু আছে, সাহাবী বললেন কোরআনের কিছু আয়াত
ছাড়া আমার দেওয়ার মতো কিছু নাই। অগত্য কোরআনের আয়াতগুলোই মোহরানা ধার্য করে তাদের মধ্যে বিবাহ পড়িয়ে দেওয়া হল।(স্মরণ থেকে লিখেছি, হাদিসটি সহি, দয়া করে কেউ হাদিসটির রেফা: দিলে উপকৃত হই)।
হাদিসটি লক্ষ্য করুন, হাদিসটাতে বেশ কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে।
১। আল্লাহর নির্দেশ না আসা পর্যন্ত রসুল স: নিজ থেকে বিবাহ করতেন না, তার
মানে রসুল স: যতগুলো বিবাহ করেছেন সবগুলো আল্লাহর ইচ্ছাতে হয়েছিল।
২।
মহিলা টা নিজ থেকেই রসুল স: কে বিয়ের প্রস্তাব করলেন, এ থেকে কী বুঝা গেল।
নারীগণ ও তখন পুরুষদের নিজ থেকে বিবাহের প্রস্তাব দিতে পারতেন। খাদেজা
রদিয়াল্লাহ আনহুমা ও রসুল স: কে নিজ থেকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
নারীদের সে অধিকার ছিল তখন। আর এখন হাঁটু গেড়ে বসে আইলাবু বলে বিয়ের
প্রস্তাব না দিলে নাকি নারীজাতের জাত যায়। নারী স্বাধীনতা নিয়ে নারীরা বেশ
চিল্লাফাল্লা করে, কোথায় তাদের স্বাধীনতা সেটাও তাদের কাছে বোধগম্য নয়।
৩। তথন কোরআনের আয়াতও মোহরানা ধার্য করা হত, আর এখন ১০-২০ লাখ টাকা
মোহরানা না হলে যেন বিয়েই হয়না। আসলে এখন মোটা অংকের মোহরানা ধার্য করা হয়
মুলত তালাকের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে, ভবিষ্যতে যেন তালাক দিতে গেলে ছেলে
পক্ষকে ১৪ ঘাটের পানি খেতে হয়।
৪। বিয়ের ক্ষেত্রে দারিদ্রতা কোন
ফ্যাক্টর হতে পারে না, যদি বিয়ের ক্ষেত্রে দারিদ্রতা কোন গুরুত্বপূর্ণ
ফ্যাক্ট হতো তাহলে নিশ্চয় রসুল স: ঐ নি:সম্বলহীন সাহাবীকে বিয়ে পড়িয়ে দিতেন
না।
সুরা নুরের একটি আয়াত বলি (স্মরণ থেকেই বলছি), তোমাদের বিবাহ
যোগ্য দাসদাসীদের মধ্যে বিবাহ করিয়ে দাও, যদি তারা গরীব হয় আল্লাহ নিজ
অনুগ্রহে তাদের ধনী বানিয়ে দিবেন।
মাশা-আল্লাহ, আল্লাহ আমাদের
প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন বিয়ে করলে আল্লাহ তার নিজ অনুগ্রহে আমাদের ধনী বানিয়ে
দিবেন। আর আমরা আল্লাহর উপর ভরসা না করে, বিয়ে না করে, উপরন্তু বিয়ে করার
জন্য ৩০-৩৫ বছর গাধার খাটুনি খেটেও বিয়ে করার সামর্থ অর্জন করতে পারিনা। এই
জায়গাটায় আমরা তরুনরা বেকুবই রয়ে গেলাম, প্রেমের নামে হাজার টাকা জলে
ঢালবো, মাগার বিয়ে করবো না, এই অবস্থায় আল্লাহর অনুগ্রহের আশা করি কোন
আক্কলে (বিয়ে করে ধনী হবা, নাকি ধনী হইয়া বিয়া করবা, কোনটা??)।
এবার
ওমর র: একটা বানী বলি (এটাও স্মরণ থেকে), মানুষ কি বেকুব!!, মানুষ ধনী
হওয়ার জন্য সহজ পথ অবলম্বন করেনা, আর আল্লাহ বিয়ের মাধ্যমে রিজিক প্রশস্থ্য
করে দেন।
আমাদের সমাজের অধিকাংশ মেয়েগুলোও ব্রেইনওয়াশড। ছেলের দ্বীনদারীর চেয়ে তার পকেট কত ভারী সে দিকেই খেয়াল বেশী।
বিয়ে নিয়েও দাজ্জাল আমাদের অবচেতন মনকে বেশ দখলে নিয়েছে দেখছি। মানি বা না
মানি, আমাদের মনের অজান্তেই আমরা দাজ্জালের অনুসরণ করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত।
No comments:
Post a Comment